গোপালগঞ্জের রামদিয়ায় শূকরের পাল, ২০১৭। ছবি: ফিলিপ গাইন

সরকারি অভিধানে তারা ‘কাওরা’ হিসেবে চিহ্নিত। সাধারণ জনগণও সাধারণভাবে তাদেরকে ‘কাওরা’ বলেই ডাকে। তারা খোলা মাঠে শূকর পালন করেন। বাংলায় ‘কাওরা’ শব্দটি শূকরের সঙ্গে বসবাসকারী একটি গোষ্ঠীর প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রদর্শন করে। বাংলায় এ শব্দটি গালির সমার্থক। ইদানীং এই গোষ্ঠী নিজেদেরকে পরিচয় দিতে ‘কায়পুত্র’ শব্দটি চালু করেছে। এটি তাদের জন্য একটি সম্মানজনক শব্দ।

আপনি যদি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা বিশেষ করে সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল, নড়াইল, ইত্যাদির মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করেন, তবে হয়তো রাস্তার ধারে বা বিলের মধ্যে শূকরের পাল দেখতে পাবেন। একটি শূকরের পালে সাধারণত ২০০ থেকে ৫০০ কালো শুকর থাকে, যা দেখতে প্রায় বুনো শূকরের মতো। মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে শূকর অপবিত্র এবং তাই অবাঞ্ছিত বলে বিবেচিত হয়।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে আসা শূকরের মাংসের চাহিদা অমুসলিমদের কাছে এবং বিশেষ করে ঢাকার বড় বড় হোটেলগুলোতে রয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে আসা শূকরের মাংস ছাড়া ঢাকার খ্রিস্টানরা তাদের উৎসব ভাবতেই পারেন না। প্রকৃতপক্ষে, এই নিচু জেলাগুলোতে খোলা মাঠে লালন-পালন করা কালো শূকরগুলিকে নিয়মিতভাবে ঢাকার অদূরে কালীগঞ্জের নাগরিতে জবাই করা হয় এবং ফার্মগেটের দোকানে আনা হয়। এ বড় বড় মাংস হোটেলগুলোতেও সরবরাহ করা হয়।

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা বাড়িতেও শূকর পালন করে। তারা খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এবং অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে শূকরের মাংস খায়। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠদের কাছে শূকর অপবিত্র প্রাণী বিধায় শূকরের মাংস এখনো সস্তা। এর পুরো কৃতিত্ব কায়পুত্রদের।

শূকরের পাল ও তাদের ঘিরে থাকেন যেসব কায়পুত্র, তারা রাখাল বলে পরিচিত। অনেক দিন আমি তাদের সঙ্গে ভোর থেকে সন্ধ্যা অব্দি আনন্দের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি। শীতকালে এরা সবচেয়ে আকর্ষণীয়। বর্ষাকালে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে জলের নিচে থাকা বিলগুলো শূকরের পালকে প্রচুর খাবার উপহার দেয়। এ সময় খেয়েদেয়ে হৃষ্টপুষ্ট হয়ে ওঠে এ প্রাণীটি। জীবন্ত ও খাবার মতো যেকোনো কিছুর জন্য শূকরেরা কাদামাটি ঘাটতে থাকে। কেঁচো ও ঘুগরা থেকে শুরু করে সব ধরনের শেকড় জাতীয় খাদ্য যেমন: ঘেচু, কচু, শালুক, চিচরে ও বাদলা (বর্ষাকালে জলাভূমিতে জন্মানো বুনো উদ্ভিদ) খোলা জায়গায় বড় হওয়া শূকরের পাল ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খেতে থাকে।

বিলের বুনো উদ্ভিদ খেয়ে শূকরের পাল কৃষকদের বড় উপকার করে। এক একর জমিতে পাঁচশো শূকরের একটি পাল যদি কয়েক ঘণ্টা ধরে খায়, তবে তা বিনামূল্যে চাষ হয়ে যায়। অল্প পরিশ্রমে কৃষকরা তখন ধানের চারা লাগাতে পারে। শূকরের পাল এলে অনেক জায়গায় কৃষকরা খুশি হয়। কারণ শুকরের পাল জমিকে আগাছামুক্ত করে দেয়।

২০১৭ সালে গোপালগঞ্জের কাজুলিয়া বিলে কয়েকটি পালে দুই হাজারের বেশি শূকর পেয়েছিলাম। ২০২৩ সালে নড়াইলের ইছামতি বিলে কয়েকটি পালের মধ্যে একই সংখ্যক শূকর পেয়েছি। আমার কাছে শূকরের পালগুলো বিস্ময়কর।

প্রায় ২০১৬ সাল থেকে কায়পুত্রদের নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে আমরা বেশ কয়েকটি জেলায় শূকরের পালকে অনুসরণ করে আসছি। কায়পুত্রদের বলা যায় বাংলাদেশের সবচেয়ে দরিদ্র ও দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি। সাতক্ষীরা, যশোর ও খুলনা জেলার গ্রামে তাদের পরিবারের বাস এবং তারা পরিবার ছেড়ে সারা বছর শূকরের সঙ্গে খোলা মাঠে থাকে। ৫০০ শূকরের একটি পালের জন্য প্রায় এক ডজন শক্তিশালী রাখালের প্রয়োজন হয়।

রাখালদের যে বিষয়টি আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে তারা যত্নের সঙ্গে শূকর বড় করে। শূকরের মতো এমন বুদ্ধিমান প্রাণীর সঙ্গে যোগাযোগের বিশেষ দক্ষতা আছে তাদের। যেমনটি ইউভাল নোয়াহ হারারি শূকর সম্পর্কে তার গ্রন্থ সেপিয়েন্সে ব্রিফ হিস্ট্রি অব হিউম্যানকাইন্ডে লিখেছেন, ‘স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে শুকর সবচেয়ে বুদ্ধিমান এবং অনুসন্ধিৎসু, সম্ভবত বানর জাতীয় প্রাণীদের মধ্যে বুদ্ধিমত্তায় মানুষের পরই এদের স্থান।’

এ বিষয়টি আমি চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করেছি। এখানে অবশ্যই বলতে হয় যে, বেব নামক এক হলিউড সিনেমায় অভিনয় করে একটি শূকর একাডেমি পুরস্কারও পেয়েছে। শূকরের কিডনি ইতোমধ্যেই সফলভাবে মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এই দুটি প্রজাতির দেহের টিস্যু—মানুষ ও শূকর—নাটকীয়ভাবে মেলে। কে জানে, হয়তো এই কালো শূকরই ভবিষ্যতে একদিন অমূল্য হিসেবে প্রমাণিত হবে!

রাখালরা বলা চলে শূকরদের নিত্যসঙ্গী—তারা শূকরকে খাওয়ায়, দিনরাত তাদের সঙ্গে থাকে ও কথা বলে। শূকররাও তাদের কথা শোনে এবং তাদের নির্দেশ অনুসরণ করে। বিলের কাছে থাকা এই রাখাল ও শূকরের জীবনটা আশ্চর্য রকম সুন্দর, এটা আমাদের নজরে তেমনভাবে আসে না। আমরা সাধারণত তাদের তখনই দেখি যখন তারা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার জন্য শূকর নিয়ে রাস্তায় ওঠে বা শূকরগুলো রাস্তার পাশে খাবার খায়।

শূকরের পাল নিয়ে রাখাল, গোপালগঞ্জ, ২০১৬। ছবি: ফিলিপ গাইন

কারা এই রাখাল? কোথায় তাদের বসবাস?
সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (সেড) ২০১৯ সালে কায়পুত্র অধ্যুষিত সব গ্রামে নিবিড় গবেষণা চালায় এবং ‘কায়পুত্র: শূকর চরানো গোষ্ঠী’ শীর্ষক একটি গ্রন্থ প্রকাশ করে। গবেষণায় সেড যশোর, সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার ৪৬টি গ্রামে কায়পুত্রদের খোঁজ পায়। এ গ্রামগুলোর মধ্যে ৪১টি গ্রামের কায়পুত্ররা তাদের ঐতিহ্যবাহী পেশা—খোলা মাঠে শূকর চরানোর সঙ্গে সম্পৃক্ত। বাকি পাঁচটি গ্রামের কায়পুত্ররা রাখাল হিসেবে আর কাজ করে না। এই ৪৬টি গ্রাম ছাড়াও সেড এই তিন জেলায় আরও ২৯টি গ্রামের খোঁজ পায় যেখানে কায়পুত্ররা মৎস্যজীবীতে পরিণত হয়েছে। তারা তাদের ঐতিহ্যবাহী পেশা শূকর পালনে আর আগ্রহী নয় এবং নিজেদের কায়পুত্র হিসেবেও পরিচয় দিতে চায় না।

দেশে কায়পুত্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা আনুমানিক ১২ হাজার। কায়পুত্রদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালে তাদের মোট শূকরের পাল ছিল ১০২টি এবং শূকর ছিল ১৬ হাজার ২৯৬টি। তারা তাদের বাড়িতেও কিছু শূকর পালন করে।

কায়পুত্রদের সবাই হিন্দু ধর্মাবলম্বী হলেও হিন্দু বর্ণপ্রথার চার বর্ণের বাইরে তাদের অবস্থান এবং অস্পৃশ্য হিসেবে বিবেচিত। তাদের মতো এত নিগৃহীত, বঞ্চিত, সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন ও দরিদ্র গোষ্ঠী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আর নেই।

গত ৭ ও ৮ এপ্রিল আমি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আলিপুরে (২ নম্বর ওয়ার্ড) একটি কায়পুত্র পাড়ায় যাই। এখানে বসবাসরত ৪৭টি কায়পুত্র পরিবারের—সাতক্ষীরা-শ্যামনগর মহাসড়কের পশ্চিম পাশে ৩৯টি এবং পূর্ব পাশে আটটি—অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। তাদের অনেকে ঝুপড়িতে বাস করে। এখানকার কায়পুত্ররা জানায়, ৪৭টি পরিবার সরকারি খাসজমিভুক্ত এ জায়গাটিতে বেশ কয়েক দশক ধরে বাস করছে।
এই কায়পুত্র পাড়ার অন্তত ৫০ জন পুরুষ (রাখাল) শূকরের পাল চরাতে বাইরে আছেন। তাদের মাসিক বেতন তিন থেকে নয় হাজার টাকা। সঙ্গে তারা দৈনিক খাবারের জন্য কিছু ভাতাও পায়।

দক্ষিণ আলীপুরের এই কায়পুত্র পাড়ার একটি মর্মস্পর্শী দিক হলো, এ গ্রামের অন্তত ২৫ জন নারী বিধবা কিংবা ‘স্বামী পরিত্যক্তা’ এবং তারা পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভিক্ষা করেন। তাদেরই একজন কল্যাণী মণ্ডল, যার বয়স ষাটেরও বেশি। তার স্বামী ছিলেন একজন রাখাল, মারা গেছেন অনেক বছর হলো। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই ভিক্ষা করছেন কল্যাণী। তার এক মেয়ে, যার বিয়ে হয়ে গেছে। তালপাতা, পলিথিন ও জং ধরা টিনের তৈরি ছয় ফুট বাই ছয় ফুট আয়তনের একটি ঝুপড়িতে কল্যাণী থাকেন। বৃষ্টি পড়লে ঘুমানোর উপায় নেই, বসে থাকতে হয়। তিনি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। লাঠিতে ভর করে তাকে হাঁটতে হয়। বিধবা ভাতা হিসেবে তিনি যা পান, তা খুবই সামান্য। ভিক্ষা ছাড়া বেঁচে থাকার তার আর কোনো পথ নেই।

‘আমরা ভিক্ষা করি এবং আমাদের পুরুষেরা শূকর পালনের কাজ করে। তাই প্রতিবেশীরা আমাদেরকে ঘৃণার চোখে দেখে’, বলেন শেফালি মণ্ডল (৩৫)। তিনিও ভিক্ষা করেন এবং মাঝেমধ্যে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।

‘বাজারে চায়ের দোকানে ও হোটেলে আমাদের জন্য থাকে আলাদা কাপ ও প্লেট। আমরা সমাজে অন্য মানুষের সমান না’, বলেন তিনি।
জানা গেছে, সরকার সাতক্ষীরা-শ্যামনগর মহাসড়কটি চার লেনে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছে। এজন্য কায়পুত্রদের এই জায়গা খালি করতে বলা হয়েছে। সম্পূর্ণ ভূমিহীন এসব কায়পুত্র পরিবারের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই।

পুনর্বাসনের বিষয়ে তাদেরও কিছু পরামর্শ আছে। ‘আমরা ভূমিহীন এবং আমাদের বাসস্থানের অবস্থা এতটাই করুণ যে আমারা গৃহহীনের পর্যায়েই পড়ি’, বলেন চায়না মণ্ডল। তার দুই ছেলে রাখাল এবং তিনি নিজে মাঝেমধ্যে ভিক্ষা করেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এই জায়গার পশ্চিমে অনেক খাস জমি আছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় সেখানে আমাদের পুনর্বাসনের জন্য আমরা বারবার অনুরোধ করে আসছি।’কায়পুত্ররা সকালের খাবার খাচ্ছে, রামদয়িা, গোপালগঞ্জ, ২০১৬। ছবি: ফিলিপ গাইন

উল্লেখ্য, গত বছর আগস্টের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছিলেন। যদি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে ধরা হয়, তবে দক্ষিণ আলীপুরের এই ৪৭টি কায়পুত্র পরিবারের অবস্থা তার উল্টোটাই ইঙ্গিত দেয়! এই কায়পুত্র পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবে যদি তিনি তাদের আবাসন সমস্যার সমাধান করে দেন।

দ্রুত বর্ধমান বাংলাদেশে খোলা মাঠে শূকর চরিয়ে জীবনধারণ করা সত্যিকার অর্থে বেশ চ্যালেঞ্জিং। প্রায় ৫০০টি শূকরের একেকটি পালের দেখাশোনার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন হয়। শূকরপালের মালিকেরা ব্যাংক থেকে ঋণ পান না। মহাজনের কাছ থেকে তারা উচ্চ সুদে টাকা ধার করেন। তারা অনেক সময় এনজিও থেকেও ঋণ নেন, যা তাদের জন্য পর্যাপ্ত নয়। আবার সোয়াইন ফ্লু, কোভিড-১৯ ও নানা অজানা রোগে পালের পর পাল শূকরের মারা যাওয়ার বিরাট ঝুঁকিও রয়েছে।

২০২২ সালের জানুয়ারির শুরুর দিকে শূকরের অনেক পাল অজানা এক রোগে মারা যায়। বিরাট পালের মালিক যশোরের ভায়না গ্রামের দিলীপ মণ্ডল অসহায়ভাবে তার ৭০০ শূকরকে অজানা এক রোগে মারা যেতে দেখেন। তার প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। আলাদা আলাদা ব্যক্তির কাছে তার ঋণ ছিল প্রায় ৩০ লাখের মতো। তিনি এখন একদম নিঃস্ব। তিনি আবার ব্যবসায় কবে নাগাদ ফিরতে পারবেন বা আদৌ পারবেন কি না, তা জানেন না। এখানে আরও কায়পুত্র আছেন যারা একইভাবে অজানা রোগে তাদের শুকর মারা যেতে দেখেছেন। স্থানীয়দের রোষানলে পড়ার ভয়ে অনেকেই এসব রোগের ব্যাপারে কোনো রিপোর্ট করেন না।

কায়পুত্ররা পরিবর্তন চায়, সম্মানজনক জীবন চায়। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থনীতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মৎস্যসম্পদ ইত্যাদি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। অনেক কায়পুত্র তাদের পেশা পরিবর্তন করেছে। যারা শূকর চরানো ছেড়ে দিয়ে মৎস্য চাষে চলে গেছে, তারা সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ভালো করছে বলে মনে করছে। অনেকে তাদের কায়পুত্র উপাধি—মণ্ডল, তরফদার, বিশ্বাস, সরকার—ইত্যাদি পরিবর্তন করে চলেছে। তাদের সন্তানরা অধিক সংখ্যক স্কুলে ভর্তি হচ্ছে। তথাপি, দক্ষিণ আলিপুরের কায়পুত্রদের মতো দক্ষিণ-পশ্চিমের অন্য যেকোনো গোষ্ঠীর তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে। কিন্তু যতদিন তারা তাদের পূর্বপুরুষদের খোলা মাঠে তাদের শূকরের পাল চরানোর পেশায় থাকবে, ততদিন তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় এবং অ-রাষ্ট্রীয় পক্ষগুলোর সমর্থন ও সুরক্ষা প্রয়োজন। তাদের জরুরি প্রয়োজনগুলোর মধ্যে অন্যতম নির্ভয়ে শূকর চরানো, লাইসেন্স, বীমা, ব্যাংক ঋণ, সামাজিক সুরক্ষা, মালিকানাসহ খাস জমিতে তাদের ন্যায়সঙ্গত ভাগ, রোগে আক্রান্ত হলে শূকরের চিকিৎসা এবং গৃহপালিত পশু হিসেবে শুকরের স্বীকৃতি।

ফিলিপ গাইন: গবেষক ও সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউমেন ডেভেলপমেন্টের (সেড) পরিচালক

News Link: bangla.thedailystar.net